probashir artonad mountain logo

প্রবাসীর আর্তনাদ

ভূমিদস্যুর কালো থাবায় যারা আমার মতই নিঃস্ব, আসুন আমরা এক হই

প্রবাসীর বাড়ি দখল! অভিযুক্ত আওয়ালীগ নেতা সোহেল রেজা

ইত্তেহাদবার্তার নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ঢাকার দক্ষিণখান থানার আশকোনা এলাকায় মোঃ ইসমাইল হোসেনের ক্রয়কৃত ৪০৪ নং বাড়িটি পৈতৃক সূত্রে মালিকানা পান যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী শেখ নুরুর রহমান ওরফে এছাম ও তার বোন বর্তমানে কানাডা প্রবাসী বোসাইনা আফজাল।

২০২২ সালের ৮ ই ফেব্রুয়ারিতে মি. রহমান ও বোসাইনা উভয়ে একটি চুক্তি করেন যাতে বোন তার অংশটুকু ১ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকায় ভাইয়ের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু বোসাইনা তার ভাইয়ের সাথে প্রতারণা ও উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে গোপনে সোহেল রেজা নামের স্থানীয় এক ভূমিদস্যুর কাছে তার প্রাপ্য অংশটুকু বিক্রি করে দেন। উল্লেখ্য উচ্চ আদালতের আদেশে (১৯৯৯ সালের সলেনামা ৪৪/৯৯) উল্লেখিত আছে যে, জায়গাটি উভয়েই একে অপরের সম্মতি ছাড়া বিক্রি করতে পারবে না। যতক্ষণ না একে অপরের অংশ কিনে নেয় অথবা উভয়েই অন্যের কাছে বিক্রি করে।

বোন বোসাইনা আফজাল গত ৫ বছর ধরে বাড়িটির দখলে থাকা অবস্থায় ভাড়া বাবদ ১ কোটি টাকার বেশি উত্তোলন করেন এবং তা আত্মসাৎ করেন। তার ভাইয়ের অর্ধেক ভাগের কোনো টাকাই তিনি পরিশোধ করেননি। এছাড়া বোসাইনার কাছে তার ভাই শেখ নুরুর রহমান বাড়ির বাসা ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, পানি বিল, মেরামত অনান্য বাবদ আরও ৫০ লক্ষ টাকা পেতেন। যা বোসাইনা তার ভাইকে পরিশোধ না করার ফন্দি আঁটেন বিধায় গোপনে সোহেল রেজার কাছ থেকে জমি বাবদ ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা নেন। তবে সোহেল রেজার সিকিউরিটি ডিপোজিটের সম্পূর্ণ টাকা তিনি পরিশোধ করেই কানাডা পালিয়ে যান।

সকল লেনদেন সম্পন্ন হওয়ার বিষয়টি সোহেল রেজা নিজেই শেখ নুরুর রহমানের সাথে ফোনালাপে স্বীকার করেন। কিন্তু বাড়ি কেনার কিছু দিন পার না হতেই সোহেল রেজা তার আসল রূপ দেখাতে শুরু করেন এবং শেখ নুরুর রহমানের অংশসহ পুরো বাড়িটি তার দখলে নিয়ে নেন।

মি. রহমান যুক্তরাষ্ট্রে থাকায় তার ছোট ভাই এহছানুর রহমান সবুজকে দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করান এবং স্থানীয় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। কিন্তু তাতে কোনো সুরাহা হয়নি বরং সোহেল রেজা এহছানুর রহমান সবুজকে নানান হুমকি প্রদান করে এবং তার পরিবারকেও হেনস্তা করতে থাকেন। তাদের বাড়িঘরে আটকে রাখা হয় এবং রাস্তা-ঘাটে বের হলে প্রাণ নাশের হুমকি পর্যন্ত আসে। ভয়ে তারা বাধ্য হয়ে র‍্যাব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় এমপি ও কাউন্সিলরের স্মরণাপন্ন হন। কিন্তু তারা কেউই বিষয়টি আমলে না নিলে ভুক্তভোগীরা আরো বিপাকে পরে যায় এবং স্থানীয় সালিশ ব্যবস্থার মাধ্যমে সমঝোতার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সোহেল রেজা সেখানেও সালিশগণের উপস্থিতির মধ্যেই শেখ নুরুর রহমানের পক্ষে এহছানুর রহমান সবুজকে দিয়ে জোর করে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। পরবর্তীতে সেই কাগজটিতে তিনি শেখ নুরুর রহমানের কাছে ১৫ লক্ষ টাকা পাওয়ার কথা নিজেই লিখে নেন এবং ৩ তলা বিশিষ্ট বাড়ির সকল ভাড়াটিয়াদের বলেন সালিশগণ তাকে ভাড়া বুঝিয়ে দিতে বলেছেন। বিষয়টি নিয়ে দক্ষিণ খান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেন এহছানুর রহমান সবুজ। এছাড়া তিনি পূর্বের ভাড়াটিয়াদের অগ্রীম ভাড়া ফেরত না দিয়েই নতুন ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে অগ্রীম বাবদ নগদ ৯ লক্ষ টাকা গ্রহণ করেন। যা থেকে কোনো অংশই শেখ নুরুর রহমানকে দেওয়া হয়নি, অথচ তিনি এই সম্পত্তির অর্ধেক মালিক। আমাদের এমনটাই অভিযোগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী শেখ নুরুর রহমান ওরফে এছাম।

অভিযোগটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আমাদের প্রতিনিধি মুঠোফোনে সোহেল রেজার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি আমাদের সংবাদ কর্মীদের জানান, “শেখ নুরুর রহমানের আনিত অভিযোগটি পুরোপুরি সত্য এবং সোহেল রেজা রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে এসব দখলদারিত্ব চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীদের কাছে সোহেল রেজা এক আতংকের নাম। অবৈধভাবে ঘর-বাড়ি দখল দেওয়া তার নেশা।”

বর্তমানে শেখ নুরুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করায় কোনো দপ্তরেরই সহযোগিতা পাচ্ছেন না। তাই তিনি নিজ সম্পত্তি উদ্ধারে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছেন এবং এমতাবস্থায় তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাহায্যও চেয়েছেন। তার দাবি সোহেল রেজার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে এবং কোনো দপ্তর তাকে সহযোগিতা করছে না।

Share on:

Facebook
Twitter
LinkedIn